ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

মাতামুহুরী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে অনিয়ম, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পাউবোর কর্মকর্তাকে বরখাস্ত

চকরিয়া প্রতিনিধি ::  কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের অধীনে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সিসি ব্লক তৈরির ঘটনায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক শাখা কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু এই কাজের সাথে সরাসরি জড়িত ঠিকাদার ও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এতে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, অনিয়মের কাজে জড়িত প্রভাবশালী ঠিকাদার ও তার সহযোগী স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা কি তবে পার পেয়ে যাবেন? তবে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মাতামুহুরী নদীর কোচপাড়া পয়েন্টের ৩০০ মিটার ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্যারচরের ২০০ মিটারে ব্লক বসানোর জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকার এই কাজে অনিয়মের জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সম্প্রতি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্লক তৈরির স্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। এর একদিন পর অভিযান চালান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে অতিরিক্ত পরিচালক হুমায়ন কবিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অ্যানফোর্সমেন্ট টিম। এসময় দুদক টিম কোচপাড়া অংশের ৩০০ মিটার তীর সংরক্ষণের জন্য তৈরিকৃত ব্লকগুলোর মান দেখে তারা বুঝতে সক্ষম হন অনিয়মের মাধ্যমে এসব ব্লক তৈরি করা হয়েছে। তাই কয়েকটি নমুনা ব্লক সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেন ঢাকার ল্যাবে। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাস্কফোর্সের প্রধান তোফায়েল আহমদ সরেজমিন ব্লক তৈরির স্থল এবং তৈরি ব্লক সচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় অনিয়ম পাওয়ায় কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিরিঙ্গা শাখা কর্মকর্তা (এসও) তারেক বিন ছগীরকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন।
এ প্রসঙ্গে চকরিয়ার এক জনপ্রতিনিধি চকরিয়া নিউজকে বলেন, যেসব প্রভাবশালী ঠিকাদার ও সাব ঠিকাদার এই ব্লক তৈরির কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন ছোট কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তা অমানবিক। তাছাড়া বরখাস্ত শাখা কর্মকর্তার অধীনে অন্তত ১০টি সাইটে কাজ চলছে। সেখানে একটি সাইটে সার্বক্ষণিক বসে থাকা তো একজন শাখা কর্মকর্তার পক্ষে সম্ভব নয়। এ কারণে অন্যসাইটে গেলে ঠিকাদার তার ইচ্ছেমতো মাতামুহুরী নদীর পলিমাটি মিশ্রিত বালু ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ব্লকগুলো তৈরি করে। জানতে চাইলে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা (এসও) তারেক বিন ছগীর দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমি তো ছোট পদের চাকুরে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যে আদেশ দেবেন তা মাথা পেতে নিতে হবে আমাকে। তিনি বলেন, মাতামুহুরী নদীর কোচপাড়া অংশের ৩০০ মিটারে বসানোর জন্য যেসব ব্লক তৈরি করা হচ্ছে সেখানে কিছু ব্লকে অনিয়ম হয়েছে বলে ধারণা। তবে সেসব ব্লক বাজেয়াপ্ত করে নতুন ব্লক তৈরির কাজ শুরু হবে শীঘ্রই। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ জাফর আলম বলেন, অনিয়মে জড়িত ঠিকাদারের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছোট কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে বিষয়টির সমাধান হবে না। পাশাপাশি নতুন করে সিডিউল অনুপাতে ব্লকের কাজ শুরু করতে হবে।

পাঠকের মতামত: